হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে আটক হয়েছেন তারেক আলম আলোচিত ব্যবসায়ী ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী তারেক আলম। বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে লন্ডন থেকে ঢাকায় আসার পরপরই তাকে আটক করা হয়।
তারেক আলমের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি ও হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে। তিনি ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী এবং দীর্ঘদিন ধরে দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দুদকের একটি টিম বিমানবন্দরে অবস্থান নিয়ে তাকে আটক করে।
দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে এই অভিযানে অংশ নেয় কমিশনের বিশেষ টিম। আটককৃত তারেক আলমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতে হাজির করার প্রক্রিয়া চলছে।
সূত্র জানায়, তারেক আলম বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ভুয়া কাগজপত্র ও মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে শত শত কোটি টাকার ঋণ আদায় করে তা পাচার করেছেন। এসব কাজে তিনি বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচিতি ও প্রভাব কাজে লাগিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে দুদক বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু করেছে। অর্থ আত্মসাৎ, ব্যাংক জালিয়াতি ও বিদেশে অর্থপাচারের মতো গুরুতর অভিযোগে তিনটি রাষ্ট্রীয় সংস্থার সমন্বয়ে একটি যৌথ তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্তে আরও যাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে, তাদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, এই তদন্তের মাধ্যমে দেশের অন্যতম বড় একটি দুর্নীতির চক্রের স্বরূপ উন্মোচিত হতে পারে। তারেক আলমের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বেক্সিমকোর আর্থিক লেনদেন, ব্যাংকিং কার্যক্রম এবং বিভিন্ন চুক্তির গভীর অনুসন্ধান চলছে।
এদিকে তারেক আলমের আটকের খবরে ব্যবসায়ী মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এই তদন্তের প্রভাব দেশের শীর্ষস্থানীয় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরে পড়তে পারে।
বিষয়টি নিয়ে বেক্সিমকো গ্রুপের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে দুদক নিশ্চিত করেছে, আইনের বাইরে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না এবং সকল দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো—দেশে দুর্নীতি ও অর্থপাচার রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দুদক আগের চেয়ে অনেক বেশি তৎপর। তারেক আলম আটক
এদিকে দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তারেক আলমের ডিজিটাল ডিভাইস, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং আন্তর্জাতিক লেনদেনের তথ্য যাচাই-বাছাই করে প্রমাণ সংগ্রহের কাজও ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।