Dhaka 11:16 pm, Thursday, 31 July 2025

ঐক্যের জাদুতে রঙিন ঈদ পূর্ণমিলনী

“জাদু শিল্পের উন্নয়নে আমরা সবাই এক”—এই মন্ত্র উচ্চারণে ঢাকার জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে সম্প্রতি জমজমাট হয়ে উঠেছিল এক ব্যতিক্রমধর্মী ঈদ পূর্ণমিলনী। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বরেণ্য ও উদীয়মান যাদুশিল্পীদের পদচারণায় মিলনায়তনটি পরিণত হয়েছিল প্রাণবন্ত এক মিলনমেলায়।

কেবল আনন্দ বা বিনোদনের জন্যই নয়, এ আয়োজন হয়ে উঠেছিল জাদু শিল্পের ভবিষ্যৎ ভাবনার কেন্দ্রস্থল। স্বপ্ন, সংকল্প আর সংগঠনের আহ্বানে মুখর ছিল পুরো অনুষ্ঠান।

 

শুক্রবার বিকেলে আয়োজিত এ মিলনমেলায় উপস্থিত ছিলেন জাদুশিল্পী ঐক্য কল্যাণ সংস্থা ও জাদুশিল্পী পরিষদের সভাপতি নন্দিত জাদুশিল্পী শাহীন শাহ্, বাসেদ মাহমুদ, একে আজাদ, বদিউজ্জামান, স্বপন দিনার, বিদেশ অধিকারী, সাদাত মামুন, সোহাগ খান, রাজ রানীসহ আরও অনেক গুণী ও উদীয়মান শিল্পী।

 

জাদুশিল্পী ও সংগঠক শাহীন শাহ্ বলেন, “জাদু কেবল চোখ ধাঁধানো কৌশল নয়—এটি একটি সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার। তরুণদের মধ্যে এই শিল্পের প্রতি আগ্রহ জাগাতে আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।”

বাসেদ মাহমুদের কণ্ঠেও ছিল সংগঠনের আবেদন। তিনি বলেন, “জাদুশিল্পীদের পেশাগত স্বীকৃতি ও সম্মান নিশ্চিত করতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই পূর্ণমিলনী ছিল সেই ঐক্যের প্রতীক।”

একই সুর তুলেছেন একে আজাদ। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা প্রতিভাকে যদি আমরা ঠিকভাবে সংযুক্ত করতে পারি, তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আমাদের জাদুশিল্পীরা আলোকিত হতে পারবে।”

 

স্বপন দিনার মনে করেন, “নতুন প্রজন্মকে কেবল ট্রিক শেখালেই হবে না, তাদেরকে শিল্পের প্রতি দায়বদ্ধতা ও মানবিক মূল্যবোধের পাঠও দিতে হবে।”

আলোচনায় উঠে এসেছে একটি ‘ম্যাজিক স্কুল’ গঠনের ভাবনা, যেখানে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও কর্মশালার আয়োজন থাকবে। তরুণ শিল্পীরা তাদের বক্তব্যে এ বিষয়ে আগ্রহের কথা জানিয়ে বলেন—জাদু চর্চার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি জরুরি।

সাদাত মামুন বলেন, “অনেকে আজও জাদুকে কেবল ভেলকি মনে করেন। এই ভুল ধারণা ভাঙতে হলে আমাদেরকে সমাজে জাদুশিল্পের প্রকৃত গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে।

 

সোহাগ খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, “জাদুশিল্পী সমাজের অংশ। তাদের জন্যও প্রয়োজন সামাজিক মর্যাদা, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং নিরাপদ ভবিষ্যৎ।”

অনুষ্ঠানে ছিল জাদু প্রদর্শনী নিয়ে শিল্পীদের মতবিনিময়, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা এবং একে অপরকে চিনে নেওয়ার মুহূর্ত।

 

পুরো আয়োজনেই ছিল আবেগ, দায়বদ্ধতা এবং এক অভিন্ন লক্ষ্য—জাদু শিল্পকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাওয়া।

অনুষ্ঠান শেষে সবার কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয় একই বাক্য— “জাদু শিল্পের উন্নয়নে আমরা সবাই এক।”

 

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বৈষ্ণব সেবা সংঘের মিলনমেলা: ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য বার্তা

ঐক্যের জাদুতে রঙিন ঈদ পূর্ণমিলনী

Update Time : 08:16:40 pm, Friday, 27 June 2025

“জাদু শিল্পের উন্নয়নে আমরা সবাই এক”—এই মন্ত্র উচ্চারণে ঢাকার জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে সম্প্রতি জমজমাট হয়ে উঠেছিল এক ব্যতিক্রমধর্মী ঈদ পূর্ণমিলনী। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বরেণ্য ও উদীয়মান যাদুশিল্পীদের পদচারণায় মিলনায়তনটি পরিণত হয়েছিল প্রাণবন্ত এক মিলনমেলায়।

কেবল আনন্দ বা বিনোদনের জন্যই নয়, এ আয়োজন হয়ে উঠেছিল জাদু শিল্পের ভবিষ্যৎ ভাবনার কেন্দ্রস্থল। স্বপ্ন, সংকল্প আর সংগঠনের আহ্বানে মুখর ছিল পুরো অনুষ্ঠান।

 

শুক্রবার বিকেলে আয়োজিত এ মিলনমেলায় উপস্থিত ছিলেন জাদুশিল্পী ঐক্য কল্যাণ সংস্থা ও জাদুশিল্পী পরিষদের সভাপতি নন্দিত জাদুশিল্পী শাহীন শাহ্, বাসেদ মাহমুদ, একে আজাদ, বদিউজ্জামান, স্বপন দিনার, বিদেশ অধিকারী, সাদাত মামুন, সোহাগ খান, রাজ রানীসহ আরও অনেক গুণী ও উদীয়মান শিল্পী।

 

জাদুশিল্পী ও সংগঠক শাহীন শাহ্ বলেন, “জাদু কেবল চোখ ধাঁধানো কৌশল নয়—এটি একটি সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার। তরুণদের মধ্যে এই শিল্পের প্রতি আগ্রহ জাগাতে আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।”

বাসেদ মাহমুদের কণ্ঠেও ছিল সংগঠনের আবেদন। তিনি বলেন, “জাদুশিল্পীদের পেশাগত স্বীকৃতি ও সম্মান নিশ্চিত করতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই পূর্ণমিলনী ছিল সেই ঐক্যের প্রতীক।”

একই সুর তুলেছেন একে আজাদ। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা প্রতিভাকে যদি আমরা ঠিকভাবে সংযুক্ত করতে পারি, তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আমাদের জাদুশিল্পীরা আলোকিত হতে পারবে।”

 

স্বপন দিনার মনে করেন, “নতুন প্রজন্মকে কেবল ট্রিক শেখালেই হবে না, তাদেরকে শিল্পের প্রতি দায়বদ্ধতা ও মানবিক মূল্যবোধের পাঠও দিতে হবে।”

আলোচনায় উঠে এসেছে একটি ‘ম্যাজিক স্কুল’ গঠনের ভাবনা, যেখানে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও কর্মশালার আয়োজন থাকবে। তরুণ শিল্পীরা তাদের বক্তব্যে এ বিষয়ে আগ্রহের কথা জানিয়ে বলেন—জাদু চর্চার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি জরুরি।

সাদাত মামুন বলেন, “অনেকে আজও জাদুকে কেবল ভেলকি মনে করেন। এই ভুল ধারণা ভাঙতে হলে আমাদেরকে সমাজে জাদুশিল্পের প্রকৃত গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে।

 

সোহাগ খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, “জাদুশিল্পী সমাজের অংশ। তাদের জন্যও প্রয়োজন সামাজিক মর্যাদা, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং নিরাপদ ভবিষ্যৎ।”

অনুষ্ঠানে ছিল জাদু প্রদর্শনী নিয়ে শিল্পীদের মতবিনিময়, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা এবং একে অপরকে চিনে নেওয়ার মুহূর্ত।

 

পুরো আয়োজনেই ছিল আবেগ, দায়বদ্ধতা এবং এক অভিন্ন লক্ষ্য—জাদু শিল্পকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাওয়া।

অনুষ্ঠান শেষে সবার কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয় একই বাক্য— “জাদু শিল্পের উন্নয়নে আমরা সবাই এক।”