দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া যেন বৃহস্পতিবার বিকেলে রূপ নেয় এক রাজনৈতিক উৎসবে। ঈদের আনন্দ আর রাজনীতির চেতনা একসাথে মিশে গিয়ে সৃষ্টি করে এক ভিন্নতর পরিবেশ—যেখানে কেবল শুভেচ্ছা বিনিময় নয়, ছিল ভবিষ্যতের লক্ষ্যে সংগঠনের শক্তি জোগানোর প্রত্যয়ও।
তেঘরিয়া ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনীতে হাজারো নেতাকর্মীর সরব উপস্থিতি ছিল যেন একটি সচল রাজনৈতিক বার্তা। বিকেল ৫টার দিকে আব্দুল্লাহপুর স্বদেশ হাসপাতালের মাঠজুড়ে মানুষের ঢল নামে। সেই ঢল ধরে নেতৃত্বে আসেন তেঘরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক খোরশেদ আলম জমিদার শোডাউনের মধ্য দিয়ে।
অনুষ্ঠানটি শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বরং সেটি পরিণত হয় এক প্রকার রাজনৈতিক সম্মেলনে—যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে খোরশেদ আলম জমিদার সরাসরি বললেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর পর এমন মিলনমেলা আমাদের চেতনায় নবজাগরণ ঘটিয়েছে। জনগণের মন জয় করতে হবে ঘরে ঘরে গিয়ে। কেরানীগঞ্জে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিজয়ের পথ তৈরি করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন তেঘরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব সামিউল্লাহ, আর বিশেষ অতিথির আসন গ্রহণ করেন ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন। ছিলেন আরও অনেকে—যুবদল নেতা আবুল কালাম আজাদ, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল হোসেন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ফারুক হোসেনসহ বিপুলসংখ্যক স্থানীয় নেতা-কর্মী।
ঈদের এই আয়োজনে কেবল শুভেচ্ছা বিনিময়েই সীমাবদ্ধ থাকেনি আলোচনা। স্থানীয় রাজনীতির জটিল বাস্তবতা, সংগঠনের চ্যালেঞ্জ এবং আগামী নির্বাচনে বিএনপির করণীয়—সব মিলিয়ে আলোচনাটি ছিল খোলামেলা এবং গভীর। বক্তারা একবাক্যে বলেছেন, “এখনই সময় প্রস্তুতির। সাংগঠনিক কার্যক্রম সুসংহত করতে হবে, জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে।”
অনুষ্ঠানকে ঘিরে তেঘরিয়া পরিণত হয় এক উৎসবমুখর চত্বরে। রাজনীতির গম্ভীরতা আর ঈদের হাসি একসঙ্গে ধরা দেয় নেতাকর্মীদের চোখে-মুখে। ঈদের মিলনমেলা শেষ হলেও, নেতাকর্মীদের হৃদয়ে রয়ে গেল ঐক্যবদ্ধ পথচলার প্রতিশ্রুতি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নতুন প্রত্যাশা।