Dhaka ০২:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ: জড়িতদের শাস্তি দাবি

পাঠ্যপুস্তকে সংবিধানবিরোধী, বিতর্কিত ও রাষ্ট্রদ্রোহী পরিভাষা ‘আদিবাসী’ শব্দ অন্তর্ভুক্ত করায় জড়িতদের চিহ্নিত করে অপসারণসহ শাস্তি দাবি করা হয়েছে।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টায়  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের দাখিল নবম-দশম শ্রেণীর ‘বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি’ বইয়ের কভার পৃষ্ঠায় শব্দটি ব্যবহার করায় এ দাবি করা হয়।

সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ আয়োজিত এ জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। অন্যত্থায় বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হুশিয়ারী দেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।

সরকারের কাছে করা তাদের প্রথম তিনটি দাবি হলো- শিক্ষা মন্ত্রণালয়/সরকার থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রত্যাহার করার ঘোষণা আসতে হবে; পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রবেশ করানোর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের অপসারণ ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে;  ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদেরকে ‘আদিবাসী’ বলা ও প্রচারণাকে রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

অন্য দুইটি দাবি হলো- শিক্ষার মানোন্নয়নের নামে দেশের শিক্ষাখাতে বৈদেশিক বা আন্তর্জাতিক সংস্থা বা এনজিও থেকে তহবিল নেওয়া বন্ধ করতে হবে এবং বৈদেশিক তহবিলে আমাদের শিক্ষার্থীদের মগজ বিক্রি করা যাবে না; দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে ‘শিক্ষানীতি, শিক্ষাক্রম, পাঠ্যক্রম এবং পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও পরিমার্জনে বিদেশি সংস্থা বা তাদের দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তিদের থেকে শতভাগ প্রভাবমুক্ত করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’র পরামর্শ ও প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টির আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক জিয়া বলেন, “নতুন বছরের দাখিল নবম-দশমের বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইতে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংযোজন খুবই আপত্তিকর, অনাকাঙ্ক্ষিত, সংবিধানবিরোধী ও রাষ্ট্রদ্রোহী কর্ম, যা বিচ্ছিন্নতাবাদের পথ সহজ করবে। কারণ বাংলাদেশে একমাত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং তাদের দেশি-বিদেশি পৃষ্ঠপোষক ও দোসররাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদেরকে ‘আদিবাসী’ বলে প্রচারণা চালায় ও স্বীকৃতি চায়। তাদের এ প্রচারণা ও স্বীকৃতি চাওয়ার পেছনে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।”

‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার না করার বিষয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সেই পৃষ্ঠপোষক ও দোসররাই ‘আদিবাসী’ শব্দটি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সরকারকে একটি তদন্ত কমিটি করে অতিদ্রুত এদের চিহ্নিত করে অপসারণ করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এরা দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার জন্য হুমকী।”

তিনি আরও বলেন, “ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা বাংলাদেশের আদিম কিংবা প্রকৃত অধিবাসী নয়। তাদের ‘আদিবাসী’ বলে প্রচার করা মানে একটি ঐতিহাসিক ও নৃতাত্ত্বিক সত্যকে অস্বীকার করা; যে প্রচারণার পেছনে আমেরিকা, ভারত, মিয়ানমার, খ্রিস্টান মিশনারি ও বিভিন্ন দেশি-বিদেশি এনজিওর যৌথ মদদ রয়েছে। এছাড়া তাদের বেতনভুক্ত কিছু দেশীয় তথাকথিত সুশীলও রয়েছে। যাদের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করা। ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ তাদের এহেন অবৈধ খায়েশ পূরণ হতে দিতে পারে না, দেবে না।”

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থী ও ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’র মুখপাত্র মুহম্মদ রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মুহম্মদ ইয়াকুব মজুমদার, রাফসান, সায়েদুল, বায়েজিদ প্রমুখ।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ঘোষিত কর্মসূচির বিরুদ্ধে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ: জড়িতদের শাস্তি দাবি

Update Time : ০২:৪৮:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

পাঠ্যপুস্তকে সংবিধানবিরোধী, বিতর্কিত ও রাষ্ট্রদ্রোহী পরিভাষা ‘আদিবাসী’ শব্দ অন্তর্ভুক্ত করায় জড়িতদের চিহ্নিত করে অপসারণসহ শাস্তি দাবি করা হয়েছে।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টায়  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের দাখিল নবম-দশম শ্রেণীর ‘বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি’ বইয়ের কভার পৃষ্ঠায় শব্দটি ব্যবহার করায় এ দাবি করা হয়।

সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ আয়োজিত এ জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। অন্যত্থায় বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হুশিয়ারী দেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।

সরকারের কাছে করা তাদের প্রথম তিনটি দাবি হলো- শিক্ষা মন্ত্রণালয়/সরকার থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রত্যাহার করার ঘোষণা আসতে হবে; পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রবেশ করানোর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের অপসারণ ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে;  ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদেরকে ‘আদিবাসী’ বলা ও প্রচারণাকে রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

অন্য দুইটি দাবি হলো- শিক্ষার মানোন্নয়নের নামে দেশের শিক্ষাখাতে বৈদেশিক বা আন্তর্জাতিক সংস্থা বা এনজিও থেকে তহবিল নেওয়া বন্ধ করতে হবে এবং বৈদেশিক তহবিলে আমাদের শিক্ষার্থীদের মগজ বিক্রি করা যাবে না; দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে ‘শিক্ষানীতি, শিক্ষাক্রম, পাঠ্যক্রম এবং পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও পরিমার্জনে বিদেশি সংস্থা বা তাদের দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তিদের থেকে শতভাগ প্রভাবমুক্ত করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’র পরামর্শ ও প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টির আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক জিয়া বলেন, “নতুন বছরের দাখিল নবম-দশমের বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইতে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংযোজন খুবই আপত্তিকর, অনাকাঙ্ক্ষিত, সংবিধানবিরোধী ও রাষ্ট্রদ্রোহী কর্ম, যা বিচ্ছিন্নতাবাদের পথ সহজ করবে। কারণ বাংলাদেশে একমাত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং তাদের দেশি-বিদেশি পৃষ্ঠপোষক ও দোসররাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদেরকে ‘আদিবাসী’ বলে প্রচারণা চালায় ও স্বীকৃতি চায়। তাদের এ প্রচারণা ও স্বীকৃতি চাওয়ার পেছনে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।”

‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার না করার বিষয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সেই পৃষ্ঠপোষক ও দোসররাই ‘আদিবাসী’ শব্দটি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সরকারকে একটি তদন্ত কমিটি করে অতিদ্রুত এদের চিহ্নিত করে অপসারণ করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এরা দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার জন্য হুমকী।”

তিনি আরও বলেন, “ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা বাংলাদেশের আদিম কিংবা প্রকৃত অধিবাসী নয়। তাদের ‘আদিবাসী’ বলে প্রচার করা মানে একটি ঐতিহাসিক ও নৃতাত্ত্বিক সত্যকে অস্বীকার করা; যে প্রচারণার পেছনে আমেরিকা, ভারত, মিয়ানমার, খ্রিস্টান মিশনারি ও বিভিন্ন দেশি-বিদেশি এনজিওর যৌথ মদদ রয়েছে। এছাড়া তাদের বেতনভুক্ত কিছু দেশীয় তথাকথিত সুশীলও রয়েছে। যাদের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করা। ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ তাদের এহেন অবৈধ খায়েশ পূরণ হতে দিতে পারে না, দেবে না।”

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থী ও ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’র মুখপাত্র মুহম্মদ রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মুহম্মদ ইয়াকুব মজুমদার, রাফসান, সায়েদুল, বায়েজিদ প্রমুখ।